Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৪ মে ২০১৯

কৃষির আধুনিকায়ন তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করবে- মাননীয় কৃষিমন্ত্রী


প্রকাশন তারিখ : 2019-05-13

মাননীয় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষির আধুনিকায়ন তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করবে। এর জন্য প্রয়োজন উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। রোববার (১২ মে ২০১৯) রাজধানীর আগারগাঁওতে পিকেএসএফ এর অডিটোরিয়ামে ‘তামাক বিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্ম’ এর উদ্যোগে ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০১৯’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনার ও ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক-২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।


তিনি বলেন, কৃষিকে সত্যিকার অর্থে বাণ্যিজ্যিক  কৃষি, আধুনিক কৃষি করা গেলে ২০৪০ সালের আগেই তামাক মুক্ত সমাজ গড়া যাবে। এরই মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে সকলের অংশগ্রহণ জরুরী।


মাননীয় কৃষিমন্ত্রী বলেন, তামাক ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো থেকে প্রতিবছর সরকারের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হচ্ছে, পরোক্ষভাবে তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত লোকদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ের জন্য। শুধু যারা ঢাকায় বসবাস করে, তারা সঠিকভাবে তাদের ট্যাক্স দিলে তামাক কোম্পানির এই ট্যাক্স পরিহার করা সহজ হবে এবং তামাক উৎপাদনও বন্ধ করা যাবে। তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে হবে।


অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা এক প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্বের তামাক উৎপাদনকারি ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম, প্রথমে আছে চীন। বাংলাদেশের মধ্যে তামাক উৎপাদনকারী জেলার মধ্যে প্রথম হচ্ছে কুস্টিয়া জেলা। তামাক চাষের নিবিড়তা ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত শতকরা ১৪৫ ভাগ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে শতকরা ২১৩ ভাগ হয়েছে। এতে আরো দেখানো হয় যে সামগ্রিকভাবে তামাক চাষের চেয়ে সবজি চাষ লাভজনক। তামাক উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করা গেলে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ভেঙ্গে কৃষি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা সম্ভব।


গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ অনুযায়ী, বর্তমান দেশে মোট তামাক ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৮ লোখ, যা মোট জনগোষ্ঠীর (১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব) ৩৫.৩ শতাংশ। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই হার অনেক বেশি। তামাক ব্যবহারের ফলে দেশের অর্থনীতিতে বছরে নিট ক্ষতির পরিমাণ ওই সময় পর্যন্ত ২ হাজার ৬শ কোটি টাকা।


প্রতিবছর সিগারেট ক্রয়ে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ শতাংশ ও বিড়ি ক্রয়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ ব্যয় হয়।বর্তমানে এই ক্ষতির পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেড়েছে। শুধু ধূমপানের কারণেই আয়ুষ্কাল কমে যায় ১০ থেকে ২০ বছর। বিশ্বে যত লোক মারা যায়, তার দ্বিতীয় প্রধান কারণ ধূমপান।


অনুষ্ঠানে তামাক বিরোধী জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে অগ্রনী ভূমিকার জন্য ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, গবেষণা ও প্রকাশনা ও বিশেষ ক্যটাগরিতেমোট চার জনকে পদক প্রদান করা হয় । দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তকে ব্যক্তি ক্যাটাগরিতে, ইয়াং পাওয়ার ইন সোস্যাল অ্যাকশন (ইপসা) কে প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে  এবং বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটিকে গবেষণা/প্রকাশনা ক্যাটাগরিতে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক’ প্রদান করা হয়।  তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত গবেষণামূলক কার্যক্রম সম্পাদনে উৎসাহ প্রদান করার জন্য তরুণ গবেষক হিসেবে সৈয়দা সাজিয়া আফরোজ রুম্পাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।


‘তামাকবিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্মের আহবায়ক ও  পিকেএসএফের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল মালিক। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম।